স্থাপত্য পাবলিশার্স
বর্ধমান । কোন্নগর । কোলকাতা
Sthapatya Publishers
Burdwan | Konnagar | Kolkata
info.sthapatya@gmail.com
Shubhayan M: +918653792921
Arunava S: +9194323 43169
স্থাপত্য পাবলিশার্স
বর্ধমান । কোন্নগর । কোলকাতা
Sthapatya Publishers
Burdwan | Konnagar | Kolkata
info.sthapatya@gmail.com
Shubhayan M: +918653792921
Arunava S: +9194323 43169
Trending
Get real time updates directly on you device, subscribe now.
দক্ষিণবঙ্গে বাড়ি বানাচ্ছে এক বাঙালি-সুইডিশ দম্পতি, বাড়ির স্থপতি এক ফ্রেঞ্চ যিনি থাকেন কলকাতায়, বাড়ির মিস্ত্রি হল বাঙালি আর গুজরাটি এবং ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করছে দুই বাঙালি আর পাঞ্জাবী ছোকরা। মানে যাকে বলে একদম Multiculturalism’এর হদ্দমুদ্দ! এরকমই এক প্রজেক্টে মাসখানেকের জন্য কাজের সুযোগ হয়েছিল ২০১৭ সালে।
তখন শিবপুরে আর্কিটেকচার নিয়ে ফাইনাল ইয়ারে পড়ছি। ইন্টার্নশিপ করছি লরেন্ট ফরনিয়ারের কাছে। ফরাসী ভদ্রলোক ছাত্রাবস্থায় পিএইচডি করবেন বলে সুন্দরবনে এসে, বাংলার প্রেমে পড়ে পাকাপাকি ভাবে এখানেই থেকে গেছেন। একটু শক্ত ধাতের আদর্শবাদী মানুষ।
একদিন বললেন – তোমায় এবার বারুইপুরের সাইটে যেতে হবে বুঝলে। বাধ্য ছেলের মত একদিকে ঘাড় নাড়লাম। সেই মত সকাল সকাল পৌঁছে গেলাম বারুইপুর স্টেশন। আটোর সামনে বসে পাক্কা পনেরো বিশ মিনিট বাদুড় ঝোলার পর সাইটের পৌঁছে তো আমি থ! বাড়ির ছাদে এক প্রকান্ড বাঁশের কাঠামো তৈরি হচ্ছে। কলকাতার সেরা কয়েকজন দুর্গা পুজোর প্যান্ডেলের মিস্ত্রিদের নিয়ে আমার বস ছাদে উঠে বসে আছেন। বাঁশের মাচা বেঁয়ে কোনমতে প্রাণ হাতে করে তিনতলার ছাদে উঠলাম।
আসলে গোটা ছাদটা জুড়েই তৈরি হবে এক প্রকান্ড খড়ের চারচালা। এ কিন্ত আবার যেমন তেমন খড়ের ছাদ নয়। আজকাল গ্রাম বাংলায় তৈরি খড়ের চাল বর্ষাকাল গেলে প্রায় প্রতি এক-দু বছরে অন্তর বদলে দিতে হয়। তাই সমস্যা আসে বারবার।
কিন্ত এক্ষেত্রে এমন ভাবেই সেই খড়ের চাল তৈরি হবে যা টিকে থাকবে বছরের পর বছর। এছাড়াও যাতে সহজে আগুন না ধরে যায় কোনভাবে তাই থাকবে উপযুক্ত আগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা। আর সবশেষে লাগানো হবে সোলার প্যানেল। বাড়ির মালিক হলেই এক সুইডিশ রিসার্চার। আর মালকিন বাঙালী মেয়ে। যদুবংশীয় (JU)।
তা এ হেন পরিবেশবান্ধব বাড়ি তৈরির জন্য প্রয়োজন দক্ষ মিস্ত্রির। বাঁশের কাজ করছে দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল বাঁধে এমন কয়েকজন। খড়ের ছাদ বানাতে সেই গুজরাট থেকে এসেছে কয়েকজন মিস্ত্রি (Matha Chaaj নাম সংস্থার) । তারা আবার বাংলার মিস্ত্রিদের হাতে কলমে কাজ শেখাচ্ছেন যাতে পরের প্রজেক্টে তারা নিজেরাই করে নিতে পারে!
অবশ্য এখানে শেষ নয়! গোটা বাড়ির বেশির ভাগ ভেতরের দেওয়াল তৈরি হচ্ছে মাটি দিয়ে। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে প্রাথমিক কাঠামোটা তৈরির পর তাতে বিশেষ ভাবে মাটি ভরে দেওয়া হবে। কোথাও কোথাও আবার বাইরের দেওয়ালগুলোতে ফাঁক ফাঁক ইট গুলোকে সাজিয়ে তার মধ্যেই ভরে দেওয়া হচ্ছে বিয়ারের রঙিন বোতল।
আর সবথেকে আশ্চর্য হল, বাড়ির কেবলমাত্র মূল ফ্রেমটাই কনক্রিটের। বাকি ঘরের উপর যে সব ছাদ (roof slab) তৈরি করা হচ্ছে তাতে একটাও স্টিলের শিক নেই। বরং সমস্ত ছাদগুলো আসলে ইটের তৈরি এক একটা চাপা গম্বুজ। রীতিমত ইঞ্জিনিয়ারিং এর কেরামতি ! আর ভদ্রলোক কিন্ত স্থপতি হয়েও এই সব জটিল স্ট্রাকচারের সমস্ত হিসেব নিকেশ নিজেই করতেন, কোন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের সাহায্য ছাড়াই।
আর সবথেকে আশ্চর্য ব্যাপারটা কি জানেন? ফরনিয়ার স্যার একদিন কথায় কথায় বলেছিলেন যে, এই গোটা বাড়িটা প্রথাগত পদ্ধতি মেনে নির্মাণ করলে যে খরচ হত, এক্ষেত্রে প্রতি স্কোয়ার ফিটে খরচ হয়েছে তার থেকেও খানিকটা কম।
যাইহোক, আমার কাজ ছিল সাইটের দেখাশোনা করা। ভোর ভোর কোন্নগর থেকে ঢুলতে ঢুলতে পৌঁছাতাম বারুইপুর। মিস্ত্রি কাকারা নিজের মত কাজ করতেন। আমি ঘুরে ঘুরে দেখতাম সব ড্রয়িং অনুযায়ী চলছে কিনা। খড়ের কাজটা তেমন কঠিন না হলেও বিশেষ ধরণের টায়ার দড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে খুব ঘন করে খড়ের আঁটি বাধার কাজটা ছিল বেশ শ্রমসাধ্য।
কঠিন ছিল বরং ঐ ছাদের জন্য চাপা গম্বুজগুলোর (Shallow Masonry Dome) নির্মাণ করা। কল্যানীর দুই দাদা ভাই ছিল যারা খুব যত্ন নিয়ে এক একটা ইট গেঁথে গেঁথে ঐ ছাদ গুলো তৈরি করত। যেমন তাদের হাতের কাজ, তেমনই তাদের চোখের মাপ। এই দুজন আবার চুন সুরকির কাজও অল্প বিস্তর পারতেন। স্যারই শিখিয়েছিলেন অবশ্য। এই দুজনের দৈনিক মজুরি বাকিদের থেকে অনেকটাই বেশি। অলস দুপুরগুলোতে গল্প করতে করতে সবার সাথে দিব্বি আলাপ হয়ে গিয়েছিল আমার। এদের সাথেই একমাস বাদে গিয়েছিলাম উড়িষ্যার সেই পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা প্রজেক্টে কাজ করতে।
সাইটে মাঝে মধ্যে জপনীতও আসত। পাঞ্জাবী ছেলে। আইআইটি খরগপুরের ছাত্র। ভীষণ শান্ত, ভদ্র আর লাজুক ধরণের মানুষ কিন্ত কাজের বেলায় ভীষণ সিরিয়াস। মিস্ত্রি কাকাদের সাথে যা হোক কিছু খেয়ে নিয়ে আমি দুপুরবেলা খাটিয়ায় বসে ঘন্টা খানেক ল্যাদ খেতাম। জপনীত কিন্ত ঠিক ঐ ফাঁকা সময়টাতেও গেট পরীক্ষার পড়াশুনো চালিয়ে যেত।
তবে গোটা প্রজেক্টটায় সব থেকে বেশি ঘোল খেয়েছিলাম বাঁকানো ইটের সিঁড়িটা বানানোর সময়। গোটা সিঁড়িটায় একটাও Reinforcement বা স্টিলের রডের ব্যবহার হয়নি। তিনটে ইন্টারকানেক্টেড ইটের তৈরি আর্চের উপর গোটা সিঁড়িটা দাঁড়িয়েছিল। তা সে, যতবারই ড্রয়িং দেখে বানানো শুরু হয় স্যার এসে বলেন যে ভুল হয়েছে। আমি আর পাঞ্জাবী ছোকরা দুজনেই মাথা চুলকে দুজন দুজনের দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করি কেবল। শেষে একদিন স্যার নিজেই গোটা দিনটা সাইটে থেকে সিঁড়িটা বানালেন।
এভাবেই দিন কাটছিল। একদিন কাজ শেষে মিস্ত্রি দাদাদের সাথে গল্প করতে করতে একটু দেরি হয়ে গেছে। আকাশে মেঘ জমেছিল বেশ। কয়েক পশলা বৃষ্টির পর ঝুপ করেই সন্ধ্যেটা নেমে গেল। আমি সাইট থেকে বেরিয়ে কাঁচা রাস্তাটা ধরে মেন রোডের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলাম অন্ধকারের মধ্যে। হঠাৎ অনুভব করলাম যে আমার পায়ের ডানদিক কিছুতে একটা ঘষা খেল। জিনিসটা চলমান।
খানিকটা অস্বস্তি নিয়ে আমি মোবাইলের টর্চ খানা জ্বালতেই, বাবা গো বলে তিন হাত লাফ মারলাম। অন্তত চার হাত লম্বা মোটা সোটা একটা কুমিরের মত জিনিসের পেটের সাথে পা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম এতক্ষণ।
কিছুই না আসলে। প্রমান সাইজের একটা গোসাপ। বৃষ্টির পর ভদ্রলোক চড়তে বেরিয়েছেন সন্ধ্যায়। আমি আলো জ্বালতে একটু বিরক্ত হয়েই থপ থপ করে পাশের জলাটায় নেমে গেলেন। তারপর থেকে অবশ্য আরো বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছিল ভদ্রলোকের সাথে। কাউকে একটা পাত্তা দিতেন না বিশেষ। সে যাই হোক, আমি আমার মত কাঁচা রাস্তাটা বেয়ে হালদার মোড় অব্দি হেঁটে গিয়ে আটো ধরতাম স্টেশনের।
তারপর ট্রেনে বাসে করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত নটা বেজে যেত। পরের দিন আবার সেই ভোরে উঠে যাত্রা শুরু। মাস খানেক এভাবে চলার পর একদিন হঠাৎ করেই স্যার বললেন যে, এবার সপ্তাহ দুয়েকের জন্য উড়িষ্যা যেতে হবে বুঝলে। বললাম বেশ। তারপর ২০১৭’র আগস্ট মাসে কলকাতা থেকে দক্ষিণ উড়িষ্যাগামী ট্রেনে চেপে বসলাম পাহাড় জঙ্গল ঘেরা মুনিগুদার উদ্দেশে।
সেই আমার শেষ বারুইপুর যাওয়া। তারপর দেখতে দেখতে চারটে বছর পেরিয়ে এলাম।
জপনীত এখন এক খানা আইটি ফার্মে কাজ করে। আমি এমবিএ শেষ করে কদিন বাদে আমুলে জয়েন করব। আর্কিটেকচার প্রফেশনে আমরা কেউই আর থাকলাম না। এভাবেই সবাই নিজের নিজের মত জীবনের রাস্তা বেছে নেয় একদিন। শুধু স্মৃতিগুলো রয়ে যায়। বাড়িটা শেষ হবার পর কেমন দেখতে হয়েছিল সে আর দেখা হয়নি। সামান্য দুদিন আগেই স্যার ছবিগুলো পাঠালেন। কিছু ছবি অবশ্য বাড়ির মালিক লিনাসের ব্লগ থেকেও নেওয়া। রুপসাদির অনুমতি নিয়ে ছবিগুলো ব্যবহার করলাম এখানে। তাই স্থপতি Laurent Fournier ছাড়াও এই বাড়িতে যারা বসবাস করেন সেই, Linus Kendall এবং Rupsha Nath’কে ধন্যবাদ জানানো আমার অবশ্যকর্তব্য।
লেখাটা ভালো লাগলে, ফেসবুকে শেয়ার করতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে।
আপনাদের জন্য প্রোজেক্টের আরো কিছু ছবি দেওয়া রইলঃ
২০১৮ সালে এই ২০১৮ সালে এই বাড়ির নির্মাণকাজ শেষ হয় এবং পরবর্তীকালে আম্ফানের মত বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের সামনে দাঁড়িয়েও এই বাড়ির কোন ক্ষতি হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিককালে নির্মিত স্থাপত্যগুলোর মধ্যে এই বাড়ি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাই আম্ফানের পর বেশ কিছু নিউজ মিডিয়া কভার করেছিল এই বাড়িটাকে।
বি.দ্র. অনেকেই এই প্রশ্নটা করছেন যে এই মুহূর্তে এই ধরণের বাড়ির নির্মাণের জন্য খরচ কিরকম হবে?
এই প্রশ্নটা আমিও ফরনিয়ার স্যারকে করেছিলাম। উনি জানালেন যে এই মুহূর্তে ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে এইরকম স্থাপত্য নির্মাণের খরচ হল আনুমানিক ২৫০০ টাকা প্রতি স্কোয়ার ফিট।
লিখেছেন অরুনাভ সান্যাল, কো- ফাউন্ডার ও এডিটর, স্থাপত্য। কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ Architect Laurent Fournier (lohabithi@gmail.com), Linus Kendall, Rupsa Nath। ফিচার ইমেজ ও বাকি কিছু ছবি লিনাস কেন্ডালের ব্লগ থেকে নেওয়া।
স্থাপত্য সাধারন মানুষের মধ্যে আর্কিটেকচার ও ডিজাইন নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে বাংলা ভাষায় একমাত্র অনলাইন ম্যাগাজিন। আমাদের পাশে থেকে ও সমর্থন করে এই উদ্দেশ্য সফল করতে আমাদের সাহায্য করুন।
ওয়েবসাইট (Website) | ফেসবুক (Facebook) | ইন্সটাগ্রাম (Instagram) | লিঙ্কড-ইন (LinkedIn)
Get real time updates directly on you device, subscribe now.
Arunava graduated in Architecture from IIEST, Shibpur in May 2018. He recently acquired his Master's Degree in Rural Management (PGDRM) from the Institute of Rural Management, Anand (IRMA). He has an interest in Rural Sales, Marketing, and Consumer Behavior.
Arunava was a part of a National Team that won the ISB Invest-O-Pact by presenting a startup idea in the social impact space in ISB's Annual International Management Festival 2020. Arunava also won the Unknown Crafts Person Trophy, a national competition hosted by the National Association of Students of Architecture (NASA) in 2016. In the year 2018, Arunava co-founded Sthapatya (http://sthapatya.co/) which is India's first online magazine on Architecture in the Bengali Language.
Recover your password.
A password will be e-mailed to you.
I just put this up on Laurent Fournier’s FB page, but not certain he’s the right guy.
Do you have the right Laurent Fournier’s contact info?
“Dear Mr. Fournier… Are you the designer of that amazing structure built in the Indian part of the Sundarbans using a classical Bangla “bungalow” tension-stressed, cyclone resistent thatched roof? If so, please get back to me ASAP by email to . Mowdudure Rahman, my friend and colleague in Khulna, Bangladesh has land to donate to build a similar facility for his NGO on the Bangladeshi side of the Sundarbans. Await your speedy response. Or contact him directly ”
Alan Potkin, Ph.D.
Team Leader, Digital Conservation Facility Laos
Adjunct Professor, Center for Southeast Asian Studies/Center for Burma Studies
Northern Illinois University,
DeKalb IL 60115 USA
Official email
tel (+1 815) 230 9575, (+1 815) 754 0637
Primary Website <https://cultivateunderstanding.com
You may contact architect Laurent Fournier in the following Mail Id: lohabithi@gmail.com / Whatsapp No: +91 90625 25707